কেন ৫জি ইন্টারনেট আপনাকে সুপারফাস্ট অভিজ্ঞতা প্রদান করবে?

টেলিকম জায়ান্ট এরিকসন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫জি মোবাইল নেটওয়ার্ক ৪জি’র তুলনায় ১০০ গুণ পর্যন্ত বেশি দ্রুত গতিসম্পন্ন। যে কারণে আপনি ৫জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলে সুপারফাস্ট ৫জি ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন তা এই পোস্টে আমরা আলোচনা করবো।

৫জি প্রযুক্তির স্পেসিফিকেশন (Specification) আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন বা International Telecommunication Union (ITU) এবং থ্রিজিপিপি বা Third Generation Partnership Project (3GPP) কর্তৃক নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫জি প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্র ব্যাপক ভাবে উন্নত করা হয়েছে, যেমন ব্যান্ডউইথ, গতি, ল্যাটেন্সি ইত্যাদি।

নিম্নে ৫জি নেটওয়ার্কের মূল স্পেসিফিকেশনগুলো উল্লেখ করা হলো:

গতি (Speed):

ডাউনলোড স্পিড: ৫জি তে সর্বাধিক ডাউনলোড স্পিড ২০ Gbps পর্যন্ত হতে পারে।

আপলোড স্পিড: সর্বাধিক আপলোড স্পিড ১০ Gbps পর্যন্ত।

৫জি কীভাবে বদলে দিচ্ছে আমাদের জীবনযাত্রা

ল্যাটেন্সি (Latency):

এন্ড-টু-এন্ড ল্যাটেন্সি: ৫জি নেটওয়ার্কে ল্যাটেন্সি অত্যন্ত কম, সাধারণত ১ মিলিসেকেন্ডের নিচে। এটি বিশেষত রিয়েল-টাইম অ্যাপ্লিকেশন যেমন স্বয়ংক্রিয় যানবাহন ও রিমোট সার্জারির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যান্ডউইথ (Bandwidth):

৫জি নেটওয়ার্কের ব্যান্ডউইথ উল্লেখযোগ্যভাবে ৪জি থেকে বেশি। প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১ মিলিয়ন ডিভাইস সমর্থন করার ক্ষমতা রয়েছে।

ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড (Frequency Bands):

Sub-6 GHz: ৫জি নেটওয়ার্কের জন্য ৬ গিগাহার্টজের নিচের ব্যান্ড (৩.৫ GHz, ৬০০ MHz, ৭০০ MHz) ব্যবহার করা হয়, যা উচ্চ কভারেজ দেয়।

মিলিমিটার ওয়েভ (mmWave): ২৪ GHz থেকে ১০০ GHz পর্যন্ত ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়, যা দ্রুতগতি এবং উচ্চ ব্যান্ডউইথ দেয়। তবে এর কভারেজ কম।

থ্রিজিপিপি’র হালনাগাদ রিলিজ ১৮ অনুযায়ী ৫জি’র ফ্রিকোয়েন্সী নিম্নের টেবিলে দেওয়া হলোঃ

Frequency range designationCorresponding frequency range
FR1410 MHz – 7125 MHz
FR2FR2-124250 MHz – 52600 MHz
FR2-252600 MHz – 71000 MHz

সংযোগের ঘনত্ব (Connection Density):

প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫জি নেটওয়ার্ক প্রায় ১ মিলিয়ন ডিভাইস সংযোগ করতে সক্ষম, যা IoT ডিভাইসের ব্যবহারকে আরও কার্যকর করে তুলবে।

মোবিলিটি (Mobility):

৫জি নেটওয়ার্ক ৫০০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত গতির যানবাহনে সংযোগ বজায় রাখতে সক্ষম, যা দ্রুত গতির ট্রেন বা গাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য উপযোগী।

শক্তি দক্ষতা (Energy Efficiency):

৫জি প্রযুক্তি কম শক্তি ব্যবহার করে উচ্চ ক্ষমতার সংযোগ সরবরাহ করতে পারে। এর ফলে ডিভাইসগুলোর ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী হয়।

নেটওয়ার্ক ক্যাপাসিটি (Network Capacity):

৫জি নেটওয়ার্কে প্রতি ব্যবহারকারীর জন্য অনেক বেশি ডেটা ট্রান্সমিশন করা যায়, যা ব্রডব্যান্ড এবং ভারী অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের জন্য সহায়ক।

স্থিতিশীলতা (Reliability):

৫জি নেটওয়ার্কে ৯৯.৯৯৯% নির্ভরযোগ্যতা রয়েছে, যা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশন ও ক্রিটিক্যাল অ্যাপ্লিকেশনসমূহে ব্যবহারের জন্য উপযোগী।

মাল্টিপল ইনপুট ও মাল্টিপল আউটপুট (MIMO):

৫জি নেটওয়ার্কে উন্নত MIMO প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, যা একই সময়ে একাধিক ডেটা স্ট্রিম সংযোগ করতে পারে। এটি বিশেষত হাই-ডেন্সিটি এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ।

নেটওয়ার্ক স্লাইসিং (Network Slicing):

৫জি নেটওয়ার্কের বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য হল নেটওয়ার্ক স্লাইসিং, যেখানে একই ফিজিক্যাল নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক তৈরি করা যায়, যার ফলে বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা একযোগে প্রদান করা সম্ভব।

৪জি আর ৫জি এর মধ্যে পার্থক্য কত বড়? জেনে নিন সহজ ভাষায়

Leave a Comment

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না। প্রয়োজনীয় ফিল্ডগুলো * চিহ্নিত।

Scroll to Top